বিশেষ প্রতিনিধি-মাদারীপুর।।
মাদারীপুরে ব্যক্তিমালিকানা জমি লিজ না দেওয়ায় জোড়পূর্বক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে কালকিনি উপজেলার মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা আক্তার বিথী ও তার ভাসুর মোক্তার মোল্লার বিরুদ্ধে। জমি দখলে বাঁধা দিতে গেলে ভাইস চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলায় নারীসহ আহত হন ৮ কৃষক। এ সময় ভুক্তোভোগীদের ১০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার রাত ১১টা ও শনিবার সকালে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাটবালী গ্রামে কয়েক দফায় আহতদের মধ্যে আবদুল হাই আকন (৬০), ঝর্ণা বেগম (৪০), জায়েদা বেগম (৪০), হাওয়া বেগমের (৫০) নাম পাওয়া গেছে। এই চারজন কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভুক্তোভোগী কৃষক, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভাটাবালী এলাকার আব্দুল হাই আকন ও আয়নাল আকনসহ বেশ কয়েকজন কৃষকের জমিতে প্রভাব খাটিয়ে মাছ চাষ করার জন্য একটি ঘের তৈরী করে কালকিনি উপজেলা মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা আক্তার বীথির ভাসুর মোক্তার মোল্লা। এতে বাঁধা দেন স্থানীয় কৃষক আয়নাল আকন। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিশীও হয়। পরবর্তীতে মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা আক্তার তার ভাসুর মোক্তার মোল্লার মাছ চাষের জন্য ওই জমি লিজ চান। এতে অস্বীকৃতি জানায় আয়নাল আকনসহ অন্য কৃষকরা। এরই জেরে ধরে আরিফা আক্তারের ভাসুর মোক্তার মোল্লা তাদের লোকজন নিয়ে আয়নাল আকনের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে কৃষক আব্দুল হাই আকন, আয়নাল আকনসহ তাদের পক্ষের ৮জন আহত হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারীও রয়েছে। এ সময় ১০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিকে আহতদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হামলায় আহত হাওয়া বেগম বলেন, হঠাৎ করেই কিছু লোকজন তাদের ঘরে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে আমাদের ওপর মারধর শুরু করে। আমাদের ঘরে আর কিছুই নেই। সব ওরা ভেঙ্গে চুরে ফেলছে।
আয়নাল আকনের ছেলে দাদন আকন বলেন, মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা আক্তার তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আমাদের জমি জোর করে দখল করে নিতে চেষ্টা করেছে। আমরা কেউ তাদের কোন জমি লিজ দেইনি। তারা জোর করে লিজ চাচ্ছে। লিজ না দেওয়া এখন জমি দখলে নিতে তার ভাসুর মোক্তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এ হামলার বিচার চাই।
কালকিনি উপজেলা মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা আক্তার বীথি বলেন, জমি লিজ নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। আমার ভাসুর বা আমরা কারো বাড়িঘরে হামলা চালাইনি এবং কাউকে মারধর করিনি। তারা নিজেরা নিজেদের ঘর ভাংচুর করছে এবং নিজেরা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । জমি লিজ দেয়া-নেয়াকে কেন্দ্র করেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।