আবাহনী লিমিটেড ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার সুপার লিগের শেষ ম্যাচটি রূপ নিয়েছিল অঘোষিত ফাইনালে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি আবাহনী। নাগালে থাকা লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরু থেকেই পথ হারায় প্রাইম ব্যাংক। তাই অভিজ্ঞ অলক কাপালির শেষের ঝলকের পরও হারতে হয় তাদের। সুবাদে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বাদ পায় আবাহনী।
শনিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৮ রানে হারিয়েছে আকাশি-নীলরা। ১৫১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪২ রান করতে পারে প্রাইম ব্যাংক। তাই শীর্ষে থেকে লিগ পর্ব শেষ করলেও রানার্সআপ হতে হয় তাদের।
ঢাকা লিগ মূলত ওয়ানডে ফরম্যাটের টুর্নামেন্ট হলেও এবার হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীই সেখানে সেরা। সবমিলে ঐতিহ্যবাহি দলটির ঢাকা লিগে এটি রেকর্ড ২১তম শিরোপা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯বার শিরোপা জিতেছে আবাহনীর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এবার যারা সুপার লিগে ওঠলেও সবার নিচে থেকে আসর শেষ করল।
আসরজুড়ে দারুণ পারফর্ম করা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ফাইনালেও আবাহনীর জয়ের নায়ক। অলরাউন্ড নৈপুণ্য মেলে ধরেন তিনি। ব্যাট হাতে ছোট্ট ঝোড়ো ইনিংসের সঙ্গে বল হাতে আগুন ঝড়ান। ৪ উইকেট নিয়ে বেঁধে রাখেন প্রতিপক্ষকে। এরআগে ১৩ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। যা আবাহনীর পুঁজি দেড়শতে নিয়ে যায়।
শেষ ওভারে প্রাইম ব্যাংকের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। শহিদুলের করা ওভারে অলক কাপালির একটি ছক্কার পরও প্রাইম ব্যাংক নিতে পারে মাত্র ৭ রান। যদিও শহিদুলের প্রথম বলটি নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। কোমর উচ্চতার ওপরে থাকলে আম্পায়ার ‘নো’ ডাকেননি তার বলটি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাইফউদ্দিনের করা প্রথম ওভারেই ফিরে যান প্রাইম ব্যাংকের ওপেনার রনি তালুকদার (১)। নিজের পরের ওভারেই এনামুল হক বিজয়কেও (১৩) তুলে নেন সাইফউদ্দিন। তাতে প্রথম ৩ ওভারে ২০ রানে ২ উইকেটে পরিণত হয় প্রাইম ব্যাংক।
তবে রুবেল মিয়া একপ্রান্তে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে প্রাইম ব্যাংকে ম্যাচে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষের ষষ্ঠ শিকার হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৬ চারে ৪১ রান করেন তিনি।
অলক কাপালির শেষের ঝড়ে প্রাইম ব্যাংকের আশা বেঁচে থাকলেও ১৭তম ওভারে পর পর দুই উইকেট তুলে নিয়ে কাজটা কঠিন করে দেন সাইফউদ্দিন। এ দফায় তিনি ফেরান নাঈম হাসান (১৯) ও রুবেল হোসেনকে (০)।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি আবাহনীও। মোহাম্মদ নাঈম (০), মুনিম শাহরিয়ারের (৩) পর লিটন দাসও (১৩ বলে ১৯) থিতু হতে পারেননি। নাজমুল হোসেন শান্তর ৪০ বলে ৪৫ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ৩৯ বলে ৪০ রান আবাহনীকে লড়াইয়ে রাখে।
শান্ত-মোসাদ্দেকের পর আফিফ হোসেন ও সাইফউদ্দিন ছোট্ট ক্যামিও ইনিংস খেলেন। আফিফ ৭ বলে ২ চারে ১২ রান করেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন সাইফউদ্দিন।
সব মিলে ১৬ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। দুই পয়েন্ট কম নিয়ে রানার্সআপ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব (২২ পয়েন্ট)। আর ২১ পয়েন্ট নিয়ে আসরে তৃতীয় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব।