সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের ভাঙন নিশ্চিত। দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ তিন নেতার নেতৃত্বে একটি অংশ দলটি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা ২৬ ডিসেম্বর আলাদা কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের বর্ধিত সভা থেকে কাউন্সিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সভায় গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু সাংবাদিকদের বলেছেন, ২৬ ডিসেম্বর ড. কামাল হোসেন কাউন্সিলে না এলে তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বলেছিলেন, ২৬ সেপ্টেম্বরের বর্ধিত সভার সঙ্গে গণফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
সে অনুযায়ী শনিবারের বর্ধিত সভায় তারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
সভায় গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, বর্ধিত সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল করব। জাতীয় কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভার মধ্যে দিয়ে গণফোরামের নামের আরেকটি দল গঠন করতে যাচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ২৬ ডিসেম্বরের কাউন্সিলে উপস্থিত ডেলিগেটদের মতামত নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে নতুন দল বিষয়ে।
ড. কামাল হোসেনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে মন্টু বলেন, আমরা এখনো বিশ্বাস করি, ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে আসবেন। বিতর্কিত লোকদের পরিহার করবেন। মাঠের পোড় খাওয়া লোকদের নিয়ে এগিয়ে যাবেন। আর তিনি না আসলে তার বহিষ্কারের বিষয়ে আমাদের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেব। সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা আসবে। তাদের মতামত সাপেক্ষে তার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিষয়ে মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে আমরা এখন কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। সামনে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মিটিং আছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেব।
ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে একাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণ এবং জোটে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াতের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না। আর আমি একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব বলেছিলাম কামাল হোসেনকে। কিন্তু তিনি যেহেতু দলের সভাপতি ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নির্দেশে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ আমি তার আদেশ অমান্য করতে পারি না সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। আর সেই নির্বাচন কীভাবে আগের রাতে হয়ে গেছে আমরা সবাই জানেন।
অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণফোরাম জাতীয় ঐক্য চায় বলেও মন্তব্য করেন মন্টু।
বর্ধিত সভায় গণফোরামের কত জেলার প্রতিনিধি আছেন জানতে চাইলে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের সঙ্গে গণফোরামের ৫২ জেলার ২৮৩ প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন।
বর্ধিত সভায় আরো উপস্থিত গণফোরামের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম প্রমুখ।