বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য তাৎপর্যময়’।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ দুই রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান। সংঘাতের মূলকেন্দ্র জেরুজালেম নগরে আন্তঃসাম্প্রদায়িক লড়াই বন্ধ করার জন্য জো বাইডেনের উদাত্ত আহ্বান, সংকট সমাধানে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মার্কিন গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকদের দৃঢ় সমর্থনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। বিএনপি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিরসনে সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তার দেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানায়’।
সোমবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল শব্দ বাদ দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতা সরকারের নীতিহীন অবস্থান। ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা নগরী যখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে, ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়ায় বিশ্ববিবেক হতাশ হয়েছে’।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ২৩ মে ফিলিস্তিনবিরোধী ওই সিদ্ধান্তে ইসরায়েল সরকারের অভিনন্দন-টুইটের প্রেক্ষিতে তা অস্বীকার করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সরকারের অবস্থান ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতা গোটা বিষয়ে সরকারের নীতিহীন অবস্থান বেরিয়ে এসেছে’।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং অসলো চুক্তির আলোকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা বাস্তবায়নের পথ সুগম করাই হচ্ছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। চলমান হত্যাকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ায় আনার উদ্যোগসহ দুই রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন জাতিসংঘের নেতৃত্বে অতিসত্বর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই’।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ওআইসি, জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন-ন্যামসহ মুসলিম দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার বিভিন্ন উদ্যোগ, পরবর্তীকালে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সেই একই নীতি ও অবস্থান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘মুসলিম ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার পক্ষের শক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সার্বিকভাবে তাদের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। আমাদের দল ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে যুদ্ধাহতদের জন্য ওষুধ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
সরকারের তরফ থেকে কী ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত ছিল, সে বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে প্রথমেই যে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত ছিল, যেটা হচ্ছে সরকার প্রধানের উদ্যোগ। এখন আপনারা বলেন যে, সরকার প্রধান যিনি, তিনি নাকি বিশ্বনেতা। তিনি তো উদ্যোগ নিতে পারতেন সমস্ত মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়ে যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়াতে। সরকার প্রধান তো সরকারের পক্ষে অনেক বড় রকমের সহযোগিতা পাঠাতে পারতেন, সাহায্য পাঠাতে পারতেন ফিলিস্তিনিদের কাছে’।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.