নিস্তব্ধ চুয়াডাঙ্গা শহর। চারদিকে সুনসান নীরবতা। মানুষের কোলাহল নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষ এখন ঘরবন্দি। দোকানপাট, হোটেল, রেস্টুরেন্ট সবকিছু বন্ধ। শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে দিন কাটত যেসব পশু পাখির, তারা এখন অভুক্ত। খাবারের জন্য এবার সেই পাখিরা পুলিশকে ঘেরাও করেছে।
চুয়াডাঙ্গার এমন একটি ঘটনার ভিডিও বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল পেজে শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শতশত শালিকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পুলিশকে ঘিরে ধরেছে। কিচিরমিচির শব্দে খাবার প্রত্যাশা করছে পুলিশ সদস্যের কাছে। পরে পুলিশ সদস্য কিছু খাবার ছিটিয়ে দিচ্ছেন অভুক্ত পাখিগুলোকে। যা খেতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে পাখিগুলো।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শহরের বড় বাজারের শহীদ হাসান চত্বর দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের এক সার্জেন্টকে খাবারের জন্য ঘিরে ধরে পাখিগুলো। পরে ওই পুলিশ সদস্য অভুক্ত পাখিগুলোকে খাবার খাওয়ান। করোনা পরিস্থিতির কারণেই পাখিরা খাদ্য সংকটে পড়েছে। এর আগে এমনটি দেখা যায়নি।’
আগেও খাওয়ানো হতো জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আগেও খাওয়াতাম। ওখানে (শহীদ হাসান চত্বর) একটি পুলিশ বুথ আছে। লকডাউনে গাড়ির চাপ কম, মানুষের আনা-গোনা নেই। তাই না খেয়ে আছে পাখিগুলো। আমি বলে দিয়েছি, এখন থেকে পাখিগুলো মাঝে মাঝেই খাবার দেয়া হবে।’
প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার প্যাকেট খাবার বিতরণ করা হচ্ছে জানিয়ে এসপি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ক্ষুধার্ত মানুষকেও খাওয়াচ্ছি। এই অবস্থায় অনেক মানুষ না খেয়ে থাকছেন। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তাদের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন পাচ্ছি অনেকে না খেয়ে রয়েছেন। কিছুক্ষণ আগেও ফোন পেলাম ‘ন্যাংটা পীরের মাজারে’ একজন ভিখারি না খেয়ে মরণাপন্ন অবস্থা। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সদস্যরা সেখানে ছুটে গেছেন খাবার নিয়ে।’
‘দোয়া করবেন, এই জেলায় ২৯৮ জন করোনা আক্রান্ত, তারা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন’- বলেন পুলিশ সুপার।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.