টানা দুই দিন সামরিক অভিযান চালানোর পর দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। সামরিক অভিযানের নামে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ জুলাই) মধ্যরাতে ইসরায়েলি সেনাদের বহনকারী গাড়িগুলো জেনিন ছাড়তে শুরু করেছে। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে অভিযান শেষ করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে বলে ইসরায়েলি একটি প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে। এর ফলে পশ্চিম তীরের এই অঞ্চলে দুই দিনের অভিযান শেষ হতে চলেছে।
দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি সেনাদের ফিরতি কনভয় দেখেছেন। রাতের অন্ধকারে সেনারা সামরিক বাহিনীর গাড়িতে চড়ে জেনিন থেকে পর্যায়ক্রমে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
সেনা প্রত্যাহারের খবরের মধ্যেই গাজা উপত্যাকা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। স্থানীয় সময় বুধবার (৫ জুলাই) ভোররাতে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল লক্ষ্য করে এ রকেট ছোড়া হয়, যা আয়রন ডোমের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে বলেও জানায় ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস।
গত এক বছরের মধ্যে জেনিনের শরণার্থী শিবিরের ওপর একাধিক ইসরায়েলি সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে, এবং ইসরায়েলিদের লক্ষ্য করে বেশ কিছু গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় এই এলাকাটিতে ব্যাপক গোলযোগ হয়।
২০০২ সালের এপ্রিলে ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান চালায়, যাতে কমপক্ষে ৫২ জন ফিলিস্তিনি এবং এবং ২৩ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়। এর দুই দশক পর জেনিনে বড় সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েল। গত দুই দিনে প্রায় ১৪ হাজার ফিলিস্তিনির বাসস্থান জেনিন শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর সেখানে হাজার হাজার সৈন্য পাঠায়। যার ফলে সেখানে রাস্তায় রাস্তায় বন্দুকযুদ্ধ হয়।
ফিলিস্তিন রেডক্রসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযান শুরুর পর জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে এখনো পর্যন্ত তিন হাজার ফিলিস্তিনিকে স্থানীয় হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকই অসুস্থ এবং প্রবীণ।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.