স্টাফ রিপোর্টার-
দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আক্রান্তের আধিক্য বিবেচনায় রেড জোন, ইয়েলো জোন ও গ্রিন জোনে চিহ্নিত করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাস্তবায়ন হবে স্বাস্থ্যবিধি ও আইনি পদক্ষেপ।
সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ কথা জানানোর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেশের তিনটি বিভাগ, ৫০টি জেলা ও ৪০০টি উপজেলাকে পুরোপুরি লকডাউন (রেড জোন বিবেচিত) দেখানো হচ্ছে। আংশিক লকডাউন (ইয়েলো জোন বিবেচিত) দেখানো হচ্ছে পাঁচটি বিভাগ, ১৩টি জেলা ও ১৯টি উপজেলাকে। আর লকডাউন নয় (গ্রিন জোন বিবেচিত) এমন জেলা দেখানো হচ্ছে একটি এবং উপজেলা দেখানো হচ্ছে ৭৫টি।
মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে শনিবার (৬ জুন) সর্বশেষ আপডেট করা তালিকায় ঢাকা বিভাগের মধ্যে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও টাঙ্গাইলকে। এই বিভাগে শুধু ঢাকা ও ফরিদপুর আংশিক লকডাউন।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরকে। এই বিভাগে আংশিক লকডাউন ভোলা ও ঝালকাঠি।
চট্টগ্রাম বিভাগে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ফেনী, খাগড়াছড়ি, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীকে। এই বিভাগে আংশিক লকডাউন বান্দরবান, চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি।
খুলনা বিভাগের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা, মেহেরপুর, নড়াইল ও সাতক্ষীরাকে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে। এই বিভাগে আংশিক লকডাউন বলা হচ্ছে বাগেরহাট, কুষ্টিয়া ও মাগুরাকে। খুলনা বিভাগেই দেশের একমাত্র গ্রিন জোন চিহ্নিত জেলা ঝিনাইদহ, অর্থাৎ এটি লকডাউন নয়।
রাজশাহী বিভাগের মধ্যে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহীকে। এই বিভাগে আংশিক লকডাউন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ।
রংপুর বিভাগের আটটি জেলাকেই পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে। জেলাগুলো হলো- দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, রংপুর ও ঠাকুরগাঁও।
সিলেট বিভাগের সব ক’টি জেলাকেই বলা হচ্ছে পুরোপুরি লকডাউন। বিভাগের জেলাগুলো হলো- হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও সিলেট।
ময়মনসিংহ বিভাগেরও সব ক’টি জেলাকে পুরোপুরি লকডাউন বলা হচ্ছে। এ চারটি জেলা হলো জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুর।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (ইয়েলো জোন বিবেচিত) হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তবে লকডাউন নয় (গ্রিন জোন বিবেচিত) বলে দেখানো হচ্ছে ১১টি এলাকাকে। এখন পর্যন্ত পুরোপুরি লকডাউন (রেড জোন বিবেচিত) হিসেবে ঢাকার কোনো এলাকাকে দেখানো হচ্ছে না।
মহানগরীর আংশিক লকডাউন বলে চিহ্নিত ৩৮টি এলাকা হলো- আদাবর, থানা, উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, ওয়ারী, কদমতলী, কলাবাগান, কাফরুল, কামরাঙ্গীরচর, কোতয়ালী, খিলক্ষেত, গুলশান, গেন্ডারিয়া, চকবাজার, ডেমরা, তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, দক্ষিণখান, দারুসসালাম, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, পল্টন মডেল, পল্লবী, বংশাল, বাড্ডা, বিমানবন্দর, ভাটারা, মিরপুর মডেল, মুগদা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, রমনা মডেল, লালবাগ, শাহআলী, শাহজাহানপুর, শেরেবাংলা নগর, সবুজবাগ, সুত্রাপুর ও হাজারীবাগ থানা এলাকা।
আর লকডাউন নয় বলে চিহ্নিত ১১টি এলাকা হলো- উত্তরখান থানা, ক্যান্টনমেন্ট থানা, খিলগাঁও, তুরাগ, বনানী, ভাষানটেক, মতিঝিল, রামপুরা, রূপনগর, শাহবাগ ও শ্যামপুর থানা এলাকা।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, আজ রোববার (৭ জুন) থেকেই কিছু জায়গায় জোনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে লকডাউন শুরু হচ্ছে। বেশি আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়োলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা সংক্রমণমুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন করা হবে। গ্রিন জোনে সতর্কতা এবং ইয়েলো জোনে সংক্রমণ যেন আর না বাড়ে সেজন্য পদক্ষেপ থাকলেও রেড জোনে করোনার বিশেষ গাইডলাইন অনুযায়ী কঠোর হবে পুলিশ।
দেশে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ২৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায়ই আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৬৩৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ৮৪৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায়ই মারা গেছেন ৩৫ জন।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.