Free Porn
xbporn

https://www.bangspankxxx.com
Sunday, September 8, 2024
HomeScrollingঅবসর সুবিধাবোর্ডে প্রতিবছরে আর্থিক ঘাটতি প্রায় ৪৩২ কোটি টাকা

অবসর সুবিধাবোর্ডে প্রতিবছরে আর্থিক ঘাটতি প্রায় ৪৩২ কোটি টাকা

যশোর সদর উপজেলার দোগাছিয়া আহসান নগর আলিম মাদরাসা থেকে বছর দুয়েক আগে অবসর নেন সহকারী শিক্ষক ওলিয়ার রহমান। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা শেষে অবসর সুবিধার টাকা পেতে ঘুরছেন দিনের পর দিন। একদিকে শারীরিক অসুস্থতা, অন্যদিকে সন্তানদের লেখাপড়াসহ শেষ বয়সে এসে পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। নানা মাধ্যমে তদবির করেও এখনো মেলেটি টাকা। অবসর সুবিধা বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে তহবিলে টাকা নেই। তাই আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত পাননি কল্যাণ ট্রাস্টেরও টাকাও।

এতো গেল ওলিয়ার রহমানের গল্পের কথা। রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় মাইনীমুখ মডেল হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শাহ আলমের পরিবারের অবস্থা আরও করুন।

২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরে যাওয়ার পর ওই বছরের ৮ মে অবসর সুবিধার জন্য আবেদন জমা দেন শাহ আলম। অবসর সুবিধার টাকার মুখ দেখার আগেই গত বছরের ৬ জুন না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। স্বামীর মৃত্যুতে দুই অবুঝ সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্ত্রী বিবি হালিমা। কূলকিনারা না পেয়ে গত সপ্তাহে সন্তানদের নিয়ে অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন হালিমা। এ সময় সন্তানদের নিয়ে জীবন চালানোর কষ্টের কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন ওই নারী, যা ছুঁয়ে যায় সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদীসহ উপস্থিত অন্যদের।

পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা এই নারীর আর্থিক অনটন এতটাই প্রকট যে বাড়ি ফেরার গাড়ি ভাড়াও ছিল না। পরে তার দিকে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেন শরীফ সাদী। একইসঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তার স্বামীর টাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দেন।

ওলিয়ার রহমান আর বিবি হালিমাই নন, প্রতি কর্মদিবসে কয়েক হাজার আবেদনকারী শিক্ষক কিংবা তাদের প্রতিনিধিরা টাকার খোঁজ নিতে আসেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের পলাশী মোড়ের ব্যানবেইস ভবনে। কিন্তু শুধু আশ্বাস নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাদের। কারণ সংশ্লিষ্টরা আর্থিক সংকট সমাধানের আগে টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয় ভুক্তভোগীদের।

pm-3আর্থিক সংকটের অবশ্য অকপটে স্বীকারও করছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরাও। এজন্য সরকারের কাছে থোক বরাদ্দ চান তারা। এরইমধ্যে সংসদেও ভুক্তভোগীদের হয়ে এই সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের রাস্তা বের করতে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এ নিয়ে ১৬ সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে বলে জানা গেছে।

নিয়ম অনুযায়ী ২৫ বছর এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক-কর্মচারী চাকরি থেকে অবসরে গেলে সর্বনিম্ন সাড়ে ৭ লাখ টাকা অবসর সুবিধা পান। আর একজন অধ্যক্ষ প্রায় ৫০ লাখ টাকা পান। প্রতিমাসে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে অবসর সুবিধাবোর্ডে জমা হয় ৭৩ কোটি টাকা। এই হিসেবে বাৎসরিক জমা হয় ৯শ কোটি টাকা। তবে এর বিপরীতে বাৎসরিক চাহিদা ১৩শ কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রতিবছরে আর্থিক ঘাটতি প্রায় ৪৩২ কোটি টাকা।

২০০২ সালে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড গঠন হয়। জানা গেছে, এখন ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত জমা পড়া আবেদনের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। চলতি মাসের (জুলাই) আবেদন নিষ্পত্তি করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জানা গেছে, প্রতি মাসে অবসর সুবিধার জন্য গড়ে ৩ থেকে সাড়ে তিনশ আবেদন জমা হয়। ধারাবাহিকভাবে সেগুলো বোর্ডের পক্ষ থেকে নিষ্পত্তি করা হয়। এর মধ্যে মৃত্যুজনিত, হৃদরোগসহ বড় ধরণের অসুস্থতা, হজে যাওয়ার জন্য আগ্রহীদের আবেদন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কখনো কখনো নিষ্পত্তি করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত (২০২৪ সালের জুলাই) ৪০ হাজার আবেদনের বিপরীতে অবসর সুবিধা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। সে হিসেবে গত চার বছরের অনিষ্পন্ন আবেদনের অনুকূলে আর্থিক সুবিধা দিতে হলে দরকার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সবশেষ শিক্ষক-কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি পাওয়ায় অবসরের টাকাও বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। একজন শিক্ষকের প্রতিটি ইনক্রিমেন্টের বিপরীতে অবসর ভাতায় দিতে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

একজন শিক্ষক-কর্মচারী অন্তত সাতটি ইনক্রিমেন্ট পান চাকরিকালে। এই ইনক্রিমেন্টের কারণে তিনি অবসর ভাতায় ১৩ লাখ ৪ হাজার ১০০ টাকা বেশি পান।

pm-1
Caption

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারের কাছে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভোগান্তি কমাতে এক হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ চেয়েছিল অবসর সুবিধা বোর্ড। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে মাত্র ৩শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এই টাকা দিয়ে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন অবসর বোর্ডের কর্মকর্তারা।

যা বলছেন বলছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা

শিক্ষকদের এই কষ্টের কথা নিয়ে সংসদে কথা বলার পর সংশ্লিষ্টরা কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এ নিয়ে ১৬ সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি প্রাথমিকভাবে প্রথম বৈঠকে আগামী তিন বছরের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের সকল পাওনা পরিশোধের রোডম্যাপ নির্ধারণ করেছে বলে জানা যায়। এই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বে আছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) মো. রবিউল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি কাজ করছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের কষ্ট লাঘব করা যায় সেজন্য কাজ করছি।’

অন্যদিকে শিক্ষকদের এমন কষ্ট নিয়ে বিড়ম্বনায় আছেন খোদ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষক-কর্মচারীদের কষ্ট দূর করতে আন্তরিক আছেন বলে দাবি তার।

অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, ‘অবসরে গিয়ে টাকা না পাওয়া অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর হয়রানির কথা প্রতিদিন শুনতে হয়। আশা করি সংকট কেটে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের দুর্ভোগ কষ্ট দূর করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।’

সুত্র- ঢাকা মেইল

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments